শনিবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৫, ০৭:২০ অপরাহ্ন

চট্টগ্রামের পলিটেকনিক্যাল এলাকায় বীরদর্পে ডিজিটাল টোকেন বাণিজ্য

দিগন্তের বার্তা ২৪ ডেস্ক : / ২৮১ বার পঠিত
আপডেট : সোমবার, ১৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৩, ১২:২৩ পূর্বাহ্ণ

নিজস্ব প্রতিবেদক : চট্টগ্রাম মহানগরীর খুলশী থানাধীন নাসিরাবাদ পলিটেকনিক্যাল এলাকায় ব্যাটারীচালিত অটোরিক্সার থেকে ডিজিটাল টোকেন প্লেট দিয়ে প্রতিনিয়ত ডিজিটাল চাঁদাবাজি করছে একটি চক্র। এসব ব্যাটারি চালিত রিক্সা চলাচলকে কেন্দ্র করে ওই এলাকায় গড়ে উঠেছে শক্তিশালী সিন্ডিকেট। ওই সব এলাকার রাস্তাগুলোতে চলাচলরত প্রায় ২৫০টি গাড়ি থেকে দৈনিক ১০০ টাকা করে চাঁদা আদায় করা হয়। আদায়কৃত চাঁদার টাকা থেকে বিভিন্ন মহলের চাহিদা পূরণ করা হয়ে থাকে বলে জানা যায়। চাঁদার টাকা না দিলে লাইনম্যান এসব বাহন আটক করাসহ চালকদের ওপর নির্যাতন চালানোরও অভিযোগ রয়েছে। রিকসা চালকরা জানান, এই রিক্সাকে পুঁজি করে বহিরাগত শামসু, খোরশেদ, হেলাল নামের ব্যক্তিরা মহানগরের যুবলীগের প্রভাব খাটিয়ে স্থানীয় গন্যমান্য ব্যাক্তিদের তোয়াক্কা না করে এই টোকেনের মাধ্যমে দীর্ঘদিন ধরে ডিজিটালভাবে চাঁদাবাজি করে আসছে। স্থানীয় লোকেরা নিজেদের মানসন্মান রক্ষার্তে বিষয়টি এড়িয়ে চলে। রিক্সাচালকরা আরো বলেন, মহানগর যুবীগের বর্তমান কমিটির প্রভাবশালি নেতা মুলত পলিটেকনিক্যাল ছাত্রসংসদ এবং কলেজ ছাত্রলীগের নিয়ন্ত্রক, তার নির্দেশনার বাহিরে কলেজের ছাত্রলীগের নিজস্ব কোনরকম সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষমতা নেই।

জানা গেছে, স্থানীয় জনগনের যাতায়তে প্রতিনিয়ত পলিটেকনিক, মোজাফফর আহমেদ চৌধুরী সড়ক, সাউদার্ন মেডিকেল, টেকনিক্যাল মোড, খুলশী কলোনী পর্যন্ত ব্যাটারী চালিত অটো রিক্সা চলাচল করছে। প্রায় ২৫০টি রিকসা থেকে দৈনিক ২৫ হাজার টাকা অবৈধ চাঁদা উত্তোলন করছে। আর মাসে উঠছে সাড়ে ৭ লাখ টাকা। শামসু ওই নেতার হয়ে লাইনম্যান দিয়ে এসব টাকা উত্তোলন করে পুলিশসহ বিভিন্ন মহলে পাঠানো হচ্ছে বলে রিকসা চালকদের অভিযোগ। এছাড়া রিক্সা চালকরা টাকা না দিলে রিক্সাচালকদের মারধর করে পুলিশের হাতে তুলে দেয়। পরে রিকসা আনতে পুলিশকে তিন হাজার টাকা দিতে হয় বলেও অভিযোগ করে চালকরা। এদিকে রিক্সাচালকরা ক্ষোভ প্রকাশ করে আরো জানায়, আমরা সবাই কোন না কোন এলাকার ভোটার।আমরা নির্বাচনের সময় ভোটও দেই, আবার ক্ষমতাসীন দলের কিছু নেতার ইশারায় নির্যাতিতও হই। এসব চাঁদাবাজির কারণে আগামী নির্বাচনে বিশাল প্রভাব পড়বে, আমাদের প্রধানমন্ত্রী রাতদিন কষ্ট করে দেশের নিম্ম আয়ের মানুষগুলোর রুটি রুজির জন্য এত উন্নয়ন করে যাচ্ছেন অথচ এই ধরনের কিছু মুষ্টিমেয় লোকাল নেতার জন্য তা মলিন হয়ে যাচ্ছে। ওই সব আ’লীগ নেতার বিরুদ্ধে স্থানীয় ১০ আসনের সাংসদ মহিউদ্দিন বাচ্চু দৃষ্টি আকর্ষন করে বিষয়টির আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার আশা করেন চালকরা।

এবিষয়ে খুলশী থানাধীন ৮ নং শুলকবহর ওয়ার্ডের কাউান্সিলর মো. মোরশেদ আলম বলেন, টাকা উত্তোলন ও চাঁদাবাজির বিষয়টা আমি জানি। কিন্তু আমিতো ম্যাজিস্ট্রেট না, কিভাবে বন্ধ করবো। টাকা না দিলে এসব রিক্সা কিভাবে চলে। তারা টাকা দিয়েতো চালাচ্ছে। টাকা না দিলে প্রশাসনের নাকের ডগায় এগুলো কিভাবে চলছে। এ বিষয়ে আমি মেয়র মহোয়কে দুইবার অভিযোগ করেছি এবং ট্রাফিকের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার শ্যামল দত্ত মহোদয়কেও চিঠি দিয়েছি। তারপর কেন কোন অদৃশ্য বন্ধ হয়ানা সেটা আমার বোধগম্য নয়। আমার এ জোনটা অনেক আধুনিক জোন, মফস্বল জোননা। এখানে অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রযেছে। প্রতিনিয়ত দূর্ঘটনা ঘটে, চাঁবাজির কারণে। শুধু ব্যাটারী চালিত রিক্সা না চাঁদা দিয়ে এখানে গ্রাম সিএনজিও চলে। এবিষয়ে খুলশী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) রুবেল হাওলাদার বলেন, আমি সব সময় এটার বিরুদ্ধে আছি। চাঁদাবাজির বিষয়ে আমি জানিনা। রিক্সাগুলো অবৈধ এটা জানি। এসব বন্ধে উচ্চ আদালতের নির্দেশ রয়েছে। তবুও এরা এগুলো চালাচ্ছে। আর এগুলো ট্রাফিকের বিষয়। তারা চাইলে বন্ধ করতে পারে। কিন্তু তারা এসব এগুলো টো করে। টো করার পর ট্রাফিক বিভাগকে যে ফি দেয় সেটাকে চালকরা মনে করে পুলিশরকে টাকা দিচ্ছে। আসলে বিষয়টি পুরোটা ট্রাফিক বিভাগের বিষয় থানার বিষয় না।

Facebook Comments Box


এ জাতীয় আরও খবর
এক ক্লিকে বিভাগের খবর