হাতিয়া (নোয়াখালী) প্রতিনিধি: হাতিয়ায় বাড়ির সীমানা বিরোধের জেরে মারজান বেগম(৩৫) নামে এক গৃহিণীকে পিটিয়ে জখম করার অভিযোগ উঠেছে একই বাড়ির ছালেহ উদ্দিন ও তার পরিবারের বিরুদ্ধে। আহত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।
এ ঘটনায় মঙ্গলবার বিকেলে হাতিয়া থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়। এর আগে সকাল ১০ টার সময় উপজেলার তমরদ্দি ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ড পূর্ব জোড়খালী গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। পরে বুধবার (৪ ডিসেম্বর) দুপুরে পুলিশের একটি টিম অভিযোগ তদন্তে ঘটনাস্থলে যান।
অভিযোগ সূত্র ও সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, ভিকটিম মারজান বেগমের স্বামী মোঃ জসিম উদ্দিনের সাথে একই বাড়ির মোঃ হানিফ(সাবেক ইউপি মেম্বার) ‘দের সাথে বাড়ির সীমানা সংক্রান্ত বিরোধ চলে আসছে। এ বিষয়ে গ্রামীণ পর্যায়ে শালিস হলেও ভিকটিমের স্বামী মোঃ জসিম উদ্দিনের পৈত্রিক সম্পত্তির সঙ্গে সামঞ্জস্য না থাকায় আর সমাধান হয়নি। মঙ্গলবার সকালে অভিযুক্তরা ভিকটিমদের গাছ কাটতে গিয়ে বাধার সম্মুখীন হয়। এর ঘন্টাখানেক পর
মারজান বেগম বাড়ির সামনে ছাগল রাখতে গেলে ছালেহ উদ্দিন ও মোঃ হানিফের স্ত্রীসহ সংবদ্ধভাবে তাকে পিটিয়ে মারাত্মকভাবে জখম করে। তার আত্ম চিৎকারে সপ্তম শ্রেণীতে পড়ুয়া মেয়ে মালিহা ছুটে গেলে তাকেও পিটিয়ে আহত করে। পরে তাদের চিৎকারে আশ পাশের লোকজন এসে তাদেরকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে আসে।
অভিযুক্তরা হলেন, তমরদ্দি ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ড ওয়ার্ড পূর্ব জোড়খালী গ্রামের আলী আহম্মদের ছেলে ছালেহ উদ্দিন, মোঃ হানিফ ও তার স্ত্রী হাসিনা আকতার, ছালেহ উদ্দিনের স্ত্রী রুমা বেগম ও মেয়ে রিমা বেগম।
ভিকটিম মারজান বেগম জানান, হানিফ মেম্বার ও তার পরিবারের লোকেরা বহু বছর ধরে আমাদেরকে কোনঠাসা করে রাখছে। আমার স্বামী, বৃদ্ধ শ্বশুর আর ছোট ছোট মেয়ে ছাড়া পরিবারে আমাদের আর কেউ নেই। ওরা সংখ্যায় বেশী হওয়ায় এবং সম্পদশালী হওয়ায় আমাদেরকে সবসময় চাপে রাখে। ঘরের আশপাশে শুধু বেড়া দিয়ে রাখে,চলতে-ফিরতেও দেয়না। আমাদের ঘরের চলমান কাজ বন্ধ করে দিয়েছে। মালামাল নষ্ট করে ফেলছে। আমার স্বামী চাষবাস করে কোনমতে সংসার চালায়। তাই ওদের সাথে পেরে উঠছিনা। গাছ কাটতে বাধা দেওয়ার পর আমার স্বামী খেতে কাজ করতে গেলে আমাকে একা পেয়ে ওরা সবাই খুব মেরেছে। লাঠি দিয়ে আর কিল-ঘুষি মেরে আমার কান,গলা,পীঠ এবং পা রক্তাক্ত করেছে। সমস্ত শরীরে আঘাত করেছে। আমার ছোট মেয়ে মালিহাকে পিটিয়ে মুখ, আঙ্গুল রক্তাক্ত করেছে।
অভিযোগের বিষয়ে মোঃ হানিফ ও ছালেহ উদ্দিন বলেন, মারজান বেগমকে আমারা মারিনি, মহিলারা- মহিলারা মারামারি করেছে। জায়গাজমির সীমানা সংক্রান্তে সালিশ হলেও তারা মানে না।
অভিযোগের বিষয়ে হাতিয়া থানা অফিসার ইনচার্জ মো: মনিরুজ্জামান বলেন, জখমী মারজান বেগম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছে। ঘটনার বিষয়ে আমাদের আইনগত কার্যক্রম চলমান আছে।