জাতীয় ডেস্ক:-সিলেটের সীমান্তবর্তী কানাইঘাট উপজেলায় লোভাছড়া চা-বাগানে ব্রিটিশ আমলে নির্মিত শতবর্ষী দৃষ্টিনন্দন নানকার বাংলো আগুনে পুড়ে গেছে।
বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) বিকেল ৫টার দিকে এ ঘটনা ঘটেছে।
বিদ্যুতের তার ছিঁড়ে ছনের ছাউনিতে আগুন লাগে। এতে প্রায় অর্ধ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি করেছেন মালিক পক্ষ।
সিলেটের কানাইঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল আউয়াল বাংলানিউজকে বলেন, ঘরের ওপর থাকা শিমুলের ডাল ভেঙে বিদ্যুতের তারে পড়ে। এতে বিদ্যুতের তার ছিঁড়ে খড়ের (ছন দিয়ে তৈরি) চালে পড়ে আগুন লাগে।
ধারণা করা হচ্ছে আগুনে বাংলোতে থাকা অনেক মূল্যবান জিনিসপত্র পুড়ে ছাঁই হয়ে অন্তত অর্ধকোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
তিনি বলেন, বাংলো ঘরে থাকা চা-বাগানের মালিক জেমস লিও ফারগুসন নানকার পূর্ব পুরুষদের অনেক দুর্লভ ছবি, দাবি আসবাবপত্র এবং সমস্ত জিনিসপত্রসহ দু’টি রান্নাঘর পুরোপুরি পুড়ে গেছে।
অবশ্য অগ্নিকাণ্ডে কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।
লোভাছড়া চা-বাগানের মালিক বীর মুক্তিযোদ্ধা জেমস লিও ফারগুশন নানকার। স্কটিশ বংশদ্ভূত বাংলাদেশি নানকা বর্তমানে যুক্তরাজ্যে অবস্থান করছেন। তার অবর্তমানে বাগানের দেখশোনার দায়িত্বে রয়েছেন ভাগ্নে ইউসুফ ওসমান।
ইউসুফ ওসমান বলেন, বুধবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত দৃষ্টিনন্দন বাংলোটি অক্ষত ছিল। ছনের ছাউনিযুক্ত বাংলো ঘরটির চালা মেরামত কাজ করছিলেন শ্রমিকরা। বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে বিদ্যুতের একটি লাইন বাংলো ঘরের পাশে ছনের খড়ের ওপর ছিঁড়ে পড়ে। সেখান থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়। কোনকিছু বুঝে উঠার আগেই আগুনে পুরো বাংলোয় ছড়িয়ে পড়ে নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। স্থানীয় লোকজন ও চা-বাগানের শ্রমিকরা আগুন নেভানোর চেষ্টা করেও বাংলো ঘরটি রক্ষা করতে পারেননি।
খবর পেয়ে কানাইঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তানিয়া আক্তার দ্রুত ফায়ার সার্ভিসকে সেখানে যাওয়ার নির্দেশও দেন।
কানাইঘাট ফায়ার সার্ভিসের একটি টিম ঘটনাস্থলে গেলেও বাংলোর যাতায়াতের রাস্তা উঁচু থাকার কারণে ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি সেখানে নিয়ে যাওয়া সম্ভব হয়নি।
প্রসঙ্গত, কানাইঘাট উপজেলার লোভাছড়া চা-বাগানের ব্রিটিশ আমলের প্রাচীনতম বাংলোটি বৃহত্তর সিলেটের একটি ঐত্যিহ্যের স্মারক ছিল। মহান মুক্তিযোদ্ধের স্মৃতি বহন করে আসছিল বাংলোটি।