জাতীয় ডেস্ক:-মাদারীপুর জেলার কালকিনিতে একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের মাঠে শতাধিক কলাগাছ রোপাণের ঘটনা ঘটেছে। এতে মাঠে খেলাধুলা থেকে বঞ্চিত শিক্ষার্থীরা।
আর পরিবেশ নষ্ট হওয়ায় ক্ষুব্ধ শিক্ষক ও এলাকাবাসী। এরই মধ্যে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ থেকে থানায় লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে।
জেলার কালকিনির বাঁশগাড়ি ইউনিয়নের ভাটবালী গ্রামের ভাটবালী আব্দুর রহমান মোল্লা বিদ্যাপীঠ নামের বিদ্যালয় মাঠে এ ঘটনা ঘটে।
জানা গেছে, কালকিনির বাঁশগাড়ি ইউনিয়নের ভাটবালী গ্রামের ২০১৫ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় ভাটবালী আব্দুর রহমান মোল্লা বিদ্যাপীঠ।
১ একর ৮০ শতাংশ জমি দলিলমূলে মালিক হয় বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এরপর চারদিকে প্রাচীর নির্মাণ করে সেখানে বিদ্যালয় ভবন ও খেলার মাঠ নির্মাণ করা হয়।
কিন্তু শুক্রবার (৪ এপ্রিল) সকালে হঠাৎ সেখানে শতাধিক কলাগাছ রোপণ করে স্থানীয় দেলোয়ার আকন। বাধা দেওয়ায় হুমকি দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের।
বিদ্যালয়ের মাঠে কলাগাছ রোপণ করে পরিবেশ নষ্ট করায় ক্ষুব্ধ শিক্ষক ও এলাকাবাসী। এদিকে বিদ্যালয়ে মাঠে নিজেদের জমি দাবি করে কলাগাছ রোপণ করা হয়েছে বলে দাবি অভিযুক্তদের।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, বিদ্যালয়ের খেলার মাঠের জমি দখল করে কলাগাছ রোপণ করেছেন দোলোয়ার আকন ও তার লোকজন। বিষয়টি নিয়ে এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। চারদিকে প্রাচীর করা, এখন হঠাৎ দেলোয়ার আকন বিদ্যালয়ের জমি তাদের বলে দাবি করে, এটা সত্যিই হাস্যকর।
বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা জানায়, কলাগাছ রোপণ করায় একদিকে বিদ্যালয়ের সৌন্দর্য নষ্ট হয়েছে। অন্যদিকে খেলাধুলা থেকে বঞ্চিত হবে শিক্ষার্থী। এ ঘটনায় জড়িতদের বিচারের পাশাপাশি দ্রুত এ সমস্যার সমাধান দাবি করে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী ও বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
ভাটবালী আব্দুর রহমান মোল্লা বিদ্যাপীঠ-এর প্রধান শিক্ষক কৃষ্ণ মণ্ডল বলেন, বিদ্যালয় মাঠে এভাবে কলাগাছ রোপণ করা হবে বিষয়টি হাস্যকর। জমি নিয়ে বিরোধ থাকায় আদালতে একটি মামলাও চলমান। এটি সমাধান স্থানীয়ভাবেও করা যায়। আর আদালত থেকে যে সিদ্ধান্ত হয়, সেটাও মেনে নেওয়া যায়। বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কোনো ঝামেলায় জড়াতে চায় না। দ্রুত আইনিভাবে সমাধান হবে এটাই প্রত্যাশা করি।
অভিযুক্ত দেলোয়ার আকনের চাচাতো ভাই নাঈম ইসলাম বলেন, ‘আমাদের জায়গায় আমরা কলাগাছ লাগিয়েছি। এটা আমাদের পৈতৃক সম্পত্তি। জোর করে কলাগাছ রোপণ করা হয়নি। বরং আমাদের জমি স্কুল কর্তৃপক্ষ দখল করে রেখেছে। আমরাও এর সমাধান চাই।
দেলোয়ার আকন বলেন, স্কুলের জন্য আমরা ১৪ শতাংশ জমি দান করেছি। কিন্তু মাঠসহ পাশে একটা বাজারও আছে। এখানে এক একর ১৪ শতাংশ জমি আছে। স্কুলের মধ্যের জমি দখল করে রেখেছে। কিন্তু জমি আমার। কাগজপত্র আমার নামে। আমার জায়গায় আমি কলাগাছ লাগিয়েছি, ওটা স্কুলের মাঠ না! আমার সব কাগজপত্র আছে।
মাদারীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার চাতক চাকমা বলেন, ‘বিদ্যালয় মাঠে কলাগাছ রোপণ করা হয়েছে বিষয়টি নিয়ে থানায় লিখিত অভিযোগ পাওয়া গেছে। কাগজপত্র যাছাই-বাছাই শেষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এছাড়া উভয়পক্ষকেই শান্ত থাকতে বলা হয়েছে। ‘
প্রসঙ্গত, ২০২২ সালে এমপিওভুক্ত এ বিদ্যালয়ে ২২৭ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। বিদ্যালয়ে ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত পাঠদানে ১১ শিক্ষক ও সাতজন কর্মচারী কর্মরত।