ছায়েদ আহমেদ , হাতিয়া (নোয়াখালী): পশ্চিম-মধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত ঘূর্ণিঝড় মিগজাউম ভারতের অন্ধ্রপ্রদেশ অতিক্রম করেছে। কিন্তু এর প্রভাব চলমান রয়েছে এখনো। মেঘে ঢাকা আকাশ, গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি ঝরছে কখনো কখনো।
গতকাল থেকে আজ বুধবার (৬ ডিসেম্বর) পর্যন্ত নোয়াখালীর দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ার আকাশ মেঘে ঢাকা রয়েছে। মাঝে-মাঝে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টিও হচ্ছে। তবে বাতাস তেমন একটা নেই। এমতাবস্থায় চিন্তায় পড়েছে এতদ্অঞ্চলের কৃষকরা। গেলো ঘূর্ণিঝড় মিধিলি’র আক্রমণে আমনধান এবং সবজি চাষাবাদের ব্যাপক ক্ষতিসাধন হয়েছে। বিশেষ করে নিন্মভাগের আবাদি জমির ফলনে ক্ষতি হয়েছে বেশি। ক্ষেতে অবশিষ্ট আমন যা রয়েছে তারমধ্যে অর্ধেক রয়েছে এখনো কাঁচাপাকা। আর এ অবস্থায় যা কিছু কাটা হয়েছে তার কিছু জমিতে বিছিয়ে রেখেছে আর কিছু পাড়া দিয়ে রেখেছে চাষিরা। আজ সকালে উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে এমনসব পরিস্থিতি। শুন্যেরচর গ্রামের কৃষক আকতার হোসেন জানান, তার কিছু ধান কেটে পাড়া দেওয়া হয়েছে আর কিছু এখনো কাটা চলছে। সালাউদ্দিন নামের এক কৃষক জানান, তার ৮ গন্ডা জমির আমন ধান গত বৃষ্টির পানির নিচে তলিয়ে আছে আর কিছু ধান গুটানো হয়েছে। তবে যে পরিস্থিতি দেখা যাচ্ছে তাতে যদি বৃষ্টি বেশি হয় তাহলে সব শেষ হয়ে যাবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন এ কৃষক। লক্ষ্মীদিয়া গ্রামের রাশেদ নামের এক কৃষক জানান, গত ঘূর্ণিঝড়ে তার সবজি সব নষ্ট হয়ে গেছে আর এবার যদি আবারও বৃষ্টি হয়ে তবে পুরো পরিশ্রম বৃথা যাবে। এবং আর্থিক ভাবেও ক্ষতিগ্রস্ত হবে বলে শঙ্কা প্রকাশ করেন এ কৃষক।
এদিকে, হাতিয়া উপজেলা কৃষি অফিসের তথ্যমতে প্রায় ৭৮ হাজার হেক্টর আমন উৎপাদনের এখনো অর্ধেক রয়েছে কাঁচাপাকা। যা চাষিরা ঘরে তোলার অপেক্ষায় আছে।
গতকাল সন্ধ্যায় আবহাওয়া অধিদফতর দেশের সব নদীবন্দরে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত জারি করেছে। আবহাওয়াবিদ মো. বজলুর রশিদ স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে মিগজাউম স্থলভাগের অভ্যন্তরে আরও অগ্রসর হয়ে এবং বৃষ্টি ঝরিয়ে ক্রমান্বয়ে দুর্বল হতে পারে। ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন উপকূলীয় অঞ্চলে গভীর সঞ্চালনশীল মেঘমালার সৃষ্টি হচ্ছে। বিজ্ঞপ্তিতে উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার সব নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত উপকূলের কাছাকাছি থেকে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে।