বৃহস্পতিবার, ০৬ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ০১:৫৯ পূর্বাহ্ন

গাজার দখল নিতে চান ট্রাম্প

দিগন্তের বার্তা ২৪ ডেস্ক : / ৯ বার পঠিত
আপডেট : বুধবার, ৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫, ৫:০৬ অপরাহ্ণ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক:-যুক্তরাষ্ট্র সফরত ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গাজাকে যুক্তরাষ্ট্রের অধিকারে নেওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন।

গাজা উপত্যকাকে নিজেদের দখলে নিয়ে সেখান থেকে ফিলিস্তিনিদের পাশের দেশ গুলোতে পাঠিয়ে দিতে চান ট্রাম্প এবং গাজা অঞ্চলকে পুননির্মাণ করে সেখানে ‘বিশ্ব নাগরিকদের’ থাকার ব্যবস্থা করতে চান।

সংবাদ সম্মেলনে ট্রাম্পের এই অভাবনীয় প্রস্তাব উপস্থিত সাংবাদিকদের হতবাক করে দেয়। তার এই প্রস্তাব ইতিমধ্যেই আন্তর্জাতিক মহলে ব্যাপক বিতর্কের সৃষ্টি করেছে।

সংবাদ সম্মেলনে নেতানিয়াহু ট্রাম্পকে ‘ইসরায়েলের সবচেয়ে বড় বন্ধু’ বলে অভিহিত করেন এবং তার নতুন চিন্তার প্রশংসা করেন। অন্যদিকে, ট্রাম্প বলেন, তার প্রশাসন ইতোমধ্যে জাতিসংঘের মানবাধিকার পরিষদ থেকে বেরিয়ে এসেছে এবং ফিলিস্তিনিদের জন্য কাজ করা জাতিসংঘের সংস্থা ইউএনআরডাব্লিউএ-এর জন্য সকল ধরনের সহায়তা বন্ধ করে দিয়েছে।

হামাস ট্রাম্পের প্রস্তাবকে গাজায় ‘বিশৃঙ্খলা ও উত্তেজনা সৃষ্টির রেসিপি’ বলে নিন্দা করেছে।

এদিকে সৌদি আরব তাদের অবস্থান স্পষ্ট করে জানিয়েছে তারা একটি স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের পক্ষে এবং কোনোভাবেই ফিলিস্তিনিদের তাদের নিজ ভূমি থেকে বিতাড়নের চেষ্টা সমর্থন করবে না।

সৌদি আরব আবারও স্পষ্ট করেছে যে তারা স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করবে না। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রস্তাবকে প্রত্যাখ্যান করে রিয়াদ বলছে তারা এই বিষয়ে তাদের অবস্থান থেকে সরে আসবে না।

সৌদি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার বিষয়ে সৌদি আরবের অবস্থান দৃঢ় এবং অটল। যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানও পূর্ব জেরুজালেমকে রাজধানী করে ১৯৬৭ সালের সীমান্তের ভিত্তিতে একটি স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র গঠনের পক্ষে দৃঢ় সমর্থন দিয়েছেন।

ট্রাম্পের সাম্প্রতিক মন্তব্যে সৌদি আরবের অবস্থান নিয়ে কিছু বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয়েছিল, কিন্তু সৌদি সরকার তা পরিষ্কার করে দিয়েছে। তারা বলেছে, ফিলিস্তিনিদের উচ্ছেদের কোনো পরিকল্পনা তারা গ্রহণ করবে না এবং ফিলিস্তিন ইস্যুতে তাদের অবস্থান অপরিবর্তনীয়।

এই পরিস্থিতিতে, সৌদি আরব আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্য একটি নিশ্চিত ও অপরিবর্তনীয় পথ খুঁজছে অনুরোধ করেছে, যা মধ্যপ্রাচ্যের শান্তি এবং স্থিতিশীলতার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

ট্রাম্পের এই বক্তব্য বিশ্বজুড়ে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। অনেকেই মনে করছেন, এটি আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘনের শামিল হতে পারে এবং ফিলিস্তিনিদের জন্য এক কঠিন পরিস্থিতি সৃষ্টি করবে। যুক্তরাষ্ট্র যদি সত্যিই গাজা উপত্যকার নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার চেষ্টা করে, তাহলে তা মধ্যপ্রাচ্যের রাজনৈতিক ও মানবাধিকার পরিস্থিতিতে আরও অস্থিরতা সৃষ্টি করতে পারে।

বিশ্বনেতারা এখন ট্রাম্পের এই মন্তব্যকে কেবলমাত্র রাজনৈতিক বক্তব্য হিসেবে দেখবেন, নাকি এটি একটি বাস্তব পরিকল্পনার ইঙ্গিত, সেটাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে। তবে এক বিষয় নিশ্চিত— গাজার জনগণের ভবিষ্যৎ নিয়ে যে অনিশ্চয়তা দীর্ঘদিন ধরে চলছিল, তা আরও ঘনীভূত হলো।

Facebook Comments Box


এ জাতীয় আরও খবর
এক ক্লিকে বিভাগের খবর